ক্রিমিয়া প্রসঙ্গে ইউক্রেনের অবস্থান শান্তি আলোচনা ব্যাহত করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় যুদ্ধের সমাপ্তি বিলম্বিত হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুদ্ধ শেষ করার একটি চুক্তি “খুব কাছাকাছি” ছিল। কিন্তু জেলেনস্কির ‘অনমনীয়তা’ সেটিকে ব্যাহত করছে।
সম্প্রতি জেলেনস্কি আবারো স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এটি ইউক্রেনের সংবিধানবিরোধী বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, “এখানে আলোচনার কিছু নেই। এটি আমাদের সার্বভৌমত্ব ও সংবিধানের পরিপন্থী।”
অন্যদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হতে হবে যে রাশিয়া ও ইউক্রেন বর্তমানে যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, সেগুলোকেই ধরে নেওয়া। তার বক্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, রাশিয়া দখল করে রাখা অঞ্চলগুলো তাদের অধীনেই থাকতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে ক্রিমিয়াকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে অবস্থানগত পার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমার কোনো পক্ষ নেই। আমি শুধু একটি শান্তিচুক্তি দেখতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করা আমার জন্য সহজ ছিল। আমি ভেবেছিলাম, জেলেনস্কির সঙ্গে বোঝাপড়া সহজ হবে। কিন্তু তা কঠিন হয়ে পড়েছে।”
এদিকে, ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো জানিয়েছেন, এক হামলায় অন্তত ২ জন নিহত ও ৫৪ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শিশু ও এক অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন।
পূর্ব ইউক্রেনের মারহানেৎস শহরে ড্রোন হামলায় একটি শ্রমিকবাহী বাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, যদি রাশিয়া ও ইউক্রেন শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যস্থতা থেকে সরে আসতে পারে। এ বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর আগেও মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র লন্ডনে নির্ধারিত একটি শান্তি বৈঠক থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। ওই বৈঠকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে রুবিও ও উইটকফ সরে দাঁড়ানোয় এই বৈঠকের গুরুত্ব কমে যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সম্পর্কের এই টানাপোড়েন ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই