বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনভর বৃষ্টিপাতের ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এনেছে।
ঢাকার নিউমার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধূপখোলা, গেণ্ডারিয়া এলাকা সহ নানা স্থানে সড়কে পানি জমে যায়। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ চরম বিপাকে পড়েন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতেই স্থলভাগে উঠে এসে ধীরে ধীরে দুর্বল হলেও এর প্রভাব আজ শুক্রবার সারাদিনও থাকতে পারে।
তিনি জানান, স্থল গভীর নিম্নচাপটি এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং তা ধীরে ধীরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যেতে পারে। এর ফলে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া তিনি বলেন, শুক্রবার রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে এবং বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকায়ও শনিবার পর্যন্ত ভারী বর্ষণ চলতে পারে, যা নিম্নচাপের পরবর্তী সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর ফলাফল।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ঢাকার সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা ৫৫ মিলিমিটারের বেশি নয়। ফলে সড়ক ও আবাসিক এলাকায় পানি উঠে যায়।
মিরপুর, কাজীপাড়া, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ডুবে গেছে রাস্তা ও ঘরবাড়ি।
অন্যদিকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে — বিশেষ করে ভোলা, পটুয়াখালীসহ কিছু এলাকায় উঁচু জোয়ার ও ভারী বর্ষণে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে গেছে। কিছু এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ফলে রাজধানী থেকে শুরু করে উপকূল ও উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত পুরো দেশে মানুষ এখন জলাবদ্ধতা, বন্যা ও যানজটে এক জোড়া সংকটে দিন পার করছে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে দেশের বিভিন্ন রুটে, যা যোগাযোগব্যবস্থাকে আরও বিঘ্নিত করেছে।
আবহাওয়ার এমন অবস্থা আরও এক-দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।