পাকিস্তানের আকাশসীমায় অভিযান চালাতে গিয়ে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান—including অত্যাধুনিক ফরাসি তৈরি রাফায়েল—ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় বড় ধরনের সামরিক ধাক্কায় পড়েছে নয়াদিল্লি। রাফায়েলের মতো ‘গর্বের যুদ্ধবিমান’ হারানোর পর বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।
পাকিস্তান দাবি করছে, তারা নিজেদের তৈরি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের রাফায়েলসহ মোট পাঁচটি ফাইটার জেট গুলি করে ভূপাতিত করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান এই হামলায় ব্যবহার করেছে চীনের তৈরি পিএল-১৫ নামের দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, যা ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের টার্গেটেও নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
‘ওয়ার জোন’ সামরিক ম্যাগাজিনের বিশ্লেষক থমাস নিউডিক জানান, ভারতের যুদ্ধবিমানগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানে পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এমনকি ভারতের পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরেও এই ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে, যা এই দাবিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। যদিও পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেনি, তবে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, জেএফ-১৭ দিয়েই এই অভিযান চালানো হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ প্রথমে তিনটি বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর প্রকাশ করলেও, সরকারের চাপের মুখে সেটি সরিয়ে নেয়। এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন ফরাসি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, অন্তত একটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে বলে ফ্রান্স নিশ্চিত করেছে। ফরাসি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
পাকিস্তানের সাবেক এয়ার কমোডর ও বিশিষ্ট সামরিক বিশ্লেষক খালিদ চিশতি তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে এটি প্রথম ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। তিনি জানান, সম্প্রতি তিনি পাকিস্তান বিমানঘাঁটিতে গিয়ে এ ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে পাইলটদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তারাও এই ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকর রেঞ্জ ২০০ কিলোমিটার বলে উল্লেখ করেন।
ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ফ্রান্সের সামরিক বিমান নির্মাতা ড্যাসল্টের শেয়ারে বড় ধরনের ধস নামে। কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে—রাফায়েলের মতো একটি বিশ্বমানের যুদ্ধবিমান প্রথমবারের মতো যুদ্ধে ভূপাতিত হওয়ায় ভবিষ্যতে এটি বিক্রির সম্ভাবনা হুমকিতে পড়েছে। ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ইতোমধ্যেই ভারত, মিসর, কাতার, গ্রিস, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইন্দোনেশিয়া-সহ একাধিক দেশে বিক্রি হয়েছে বা বিক্রির চুক্তি হয়েছে।
২০২০ সালে ভারত প্রথম ৩৬টি রাফায়েল তাদের বিমানবহরে যুক্ত করে এবং পরে আরও ২৬টি কেনার চুক্তি করে। এই বিমান নিয়ে ভারতীয়দের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। তারা প্রায়ই বলে এসেছে, পাকিস্তানের পক্ষে এ বিমানের সমতুল্য যুদ্ধবিমান তৈরি বা প্রতিহত করা সম্ভব নয়। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে সেই দাবি ভেঙে পড়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের তৈরি চীন-পাকিস্তান যৌথ প্রকল্পের জেএফ-১৭ এখন সামরিক বিশ্লেষকদের আলোচনায় উঠে এসেছে। সাশ্রয়ী মূল্যে নির্মিত এই মাল্টিরোল যুদ্ধবিমানটি এখন দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ ইতোমধ্যে নিজেদের সরকারকে এই বিমান কেনার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঘটনার দিন ভারতের পক্ষ থেকে মোট ১২৪টি যুদ্ধবিমান বাওয়ালপুর, মুরদিক ও মোজাফ্ফরাবাদ ফ্রন্টে মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যে মোজাফ্ফরাবাদে আক্রমণের অংশ নেয় ৭০টি যুদ্ধবিমান—রাফায়েল, সু-৩০, মিগ-২৯ এবং ইসরাইলের তৈরি হেরন ড্রোন। তবে পাকিস্তান আগে থেকেই সম্ভাব্য হামলার তথ্য পেয়ে প্রস্তুত ছিল এবং তারা প্রতিহত করে জে-১০সি, এফ-১৬ ও জেএফ-১৭ থান্ডার বহর দিয়ে।
এই সংঘর্ষে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী তাদের দেশের আকাশসীমা থেকেই ‘ডগফাইটে’ লিপ্ত হয়, যা সামরিক কৌশলে মুখোমুখি আকাশযুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। সেই যুদ্ধে ভারতের পাঁচটি বিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত হয় বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। এর আগে ২০১৯ সালেও পাকিস্তানের হাতে ভারতের একটি মিগ-২৯ ভূপাতিত হয়েছিল এবং একজন পাইলট বন্দি হয়েছিলেন।
এই ঘটনাগুলো স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশপথে এখন উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে ভারতের সামরিক পরিকল্পনার ভরাডুবি, অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি—এই দুইয়ের সংঘাতে পুরো অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সামরিক ভারসাম্য পুনর্নির্ধারণ হচ্ছে।
সূত্র:আমার দেশ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই